Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

নিরাপদ সবজি চাষ ও পুষ্টি নিরাপত্তা

নিরাপদ সবজি চাষ ও পুষ্টি নিরাপত্তা
ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার১ ড. সুস্মিতা দাস২
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কৃষিতে বিস্ময়কর সাফল্য এসেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগোপযোগী কার্যক্রমের সমন্বয়ে বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। বৈশ্বিক মহামারীতে বিশ্ব যখন স্থবির তখনও দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে বাংলার কৃষি। গত এক যুগে সবজি উৎপাদনে দেশে বিপ্লব ঘটেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য মতে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদি জমি বেড়েছে বাংলাদেশে। বর্তমানে দেশের প্রায় সব অঞ্চলে সবজি চাষ হচ্ছে। সাধারণত শীতমৌসুমে উৎপাদিত সবজি এখন গ্রীষ্মকালেও পাওয়া যাচ্ছে। দেশে ২০০ জাতের মোট ৬০ ধরনের সবজি উৎপাদিত হচ্ছে। বর্তমানে দেশে ০.৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়।  বাংলাদেশে সবজি উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বিশ্বে এখন তৃতীয়। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (ঋঅঙ) এর  হিসাব মতে পূর্বে দেশে দৈনিক মাথাপিছু সবজি ভোগের পরিমাণ ছিল ৪২ গ্রাম কিন্তু বর্তমানে তা বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের  হিসাব অনুসারে প্রায় ১০০ গ্রাম। সবজি উৎপাদনের বৃদ্ধির সাথে সাথে বাংলাদেশের পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে। বাংলাদেশ খোরপোশ কৃষি থেকে বাণিজ্যিক কৃষিতে উত্তরণ ঘটিয়েছে। এখন চ্যালেঞ্জ হলো উৎপাদনের গুণগতমান নিশ্চিত করে রপ্তানিমুখী কৃষিতে বিশ্বে নিজেদের অবস্থান করে নেওয়া।
বর্তমানে উৎপাদিত ব্যাপক শাকসবজি খাদ্য চাহিদা পূরণ করে জনগণের পুষ্টিমান রক্ষা করছে এবং টেকসই উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। কর্মসংস্থান সহ গ্রামীণ অর্থনীতিতেও সবজি উৎপাদন ব্যাপক প্রভাব। অধিক বাণিজ্যিকরণের জন্য প্রয়োজন নিরাপদ সবজি চাষ ও সঠিক রপ্তানিকরণ।
এসডিজির ১৭টি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ১০টি এবং এর অন্তর্গত ৩৩টি টার্গেটের সঙ্গে  কৃষি খাতের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। তাই এসডিজির লক্ষ্য অর্জনে কৃষি খাতের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও কৃষি উৎপাদকদের আয় বৃদ্ধি অপরিহার্য। জাতিসংঘ প্রণীত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য এসডিজিতে ১৭টি অভীষ্টের মধ্যে কৃষি সম্পর্কিত অন্যতম অভীষ্ট হলো অভীষ্ট-২: ক্ষুধার অবসান, খাদ্য নিরাপত্তা ও উন্নত পুষ্টিমান অর্জন এবং টেকসই কৃষির প্রসার। ২০৩০ সালের মধ্যে ফসলের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে।  বর্তমান সরকার কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও দারিদ্র্য বিমোচনের সাথে সাথে খাদ্য নিরাপত্তা বিধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলদেশের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে কৃষির ভূমিকা অনেক। উৎপাদিত কৃষিপণ্য সঠিকভাবে রপ্তানি করতে পারলে আয় ও সক্ষমতা বাড়বে। তখন মানুষের নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য গ্রহণের হারও বাড়বে। পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৬ কোটি মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির চাহিদা পূরণে পতিত জমিতে সবজি উৎপাদনের বিকল্প নেই।
আর এই জন্য প্রয়োজন উন্নত মানের হাইব্রিড বীজ। সরকার ৯০ এর দশকের শেষের দিকে হাইব্রিড ফসলের সূচনা করে এবং এটি দেশে হাইব্রিড সবজি উৎপাদনের সূত্রপাত। বেসরকারি খাত বিশেষ করে লাল তীর, এসিআই, মেটালএগ্রো এবং আরো কিছু প্রতিষ্ঠান প্রধানত হাইব্রিড ফসল নিয়ে গবেষণা করছে। বেসরকারি খাতের সবজির বীজ বেশির ভাগই উৎপাদনে প্রাধান্য পায়। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) ও  কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দ্বারা শাকসবজির গবেষণা ও উন্নয়ন করার কাজ অব্যাহত রয়েছে। বিএআরআই এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন্ জাতের সবজি অবমুক্ত করেছে।  দেশে গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারিভাবে উদ্ভাবিত হাইব্রিড বীজ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। নার্স প্রতিষ্ঠান বিজ্ঞানীরা হাইব্রিড বীজ আবিষ্কারের গবেষণা অব্যাহত রেখেছে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট হাইব্রিড বীজ জাতের উপর গবেষণা জোরদার করেছে। হাইব্রিড বীজ এর প্রসার ঘটাতে  প্রয়োজন দক্ষ সবজি প্রজননবিদ। যাদের পর্যাপ্ত উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। ডড়ৎষফ ঠবমবঃধনষব ঈবহঃৎব একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান যা বিএআরআই-এর সাথে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা ছিল। এটি বাংলাদেশে প্রযুক্তি স্থানান্তর, সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। এই সহযোগিতা সবজির উন্নয়নে জোরদার করতে হবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল নার্স প্রতিষ্ঠান এপেক্স বডি  হিসেবে অন্যান্য নার্স প্রতিষ্ঠান সাথে সবজির গবেষণা ও উন্নয়েন কর্মকা- অব্যাহত রেখেছে। এরই অংশ হিসাবে সম্প্রতি বিএআরসি বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ‘ঋবধংরনরষরঃু ংঃঁফু ওড়ঃ নধংবফ চৎবপরংরড়হ ধমৎরপঁষঃঁৎব ভড়ৎ ংঁংঃধরহধনষব পৎড়ঢ় ঢ়ৎড়ফঁপঃরড়হ  রহ ইধহমষধফবংয’ শীর্ষক একটি প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সার, পানি এবং কীটনাশকের ভারসাম্যহীন ব্যবহার।
বর্তমানে ফসলে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে অনেকক্ষেত্রে উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। বিরাজমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সারের পূর্বাভাস দেয়ার জন্য এবং ইন্টারনেট অব থিংসভিত্তিক মেশিন লার্নিং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সঠিক সার, পানি ও কীটনাশক ব্যবহারের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বাড়ানো। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিরাপদ সবজির উৎপাদন বাড়বে।
বাণিজ্যিক নগর ভার্টিক্যাল ডিভাইস, গ্রিনহাউজ হাইড্রোপনিক, একুয়াপনিক্স ছাড়া স্মার্ট ফার্মিং ডিভাইস, স্বয়ংক্রিয় সেচসমৃদ্ধ ভার্টিক্যাল লাইন ডিভাইস, স্বয়ংক্রিয়  ছাদ-বাগান ঠান্ডাকরণ ডিভাইস ব্যবহার করে টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বিদেশি ব্রাসেলস স্প্রাউট, লেটুস, লাল টমেটো, কালো টমেটো, শসা, লালশাক, ডাঁটাশাক, ধনিয়াপাতা, ক্যাপসিকাম, চাইনিজ বাঁধাকপি, ছাড়াও পুদিনা, সেলেরি, পিয়াজপাতা সবজি চাষাবাদ এখন আমাদের দেশেই সম্ভব ।
 বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা মডিউলে রাসায়নিক সার ও মাটিতে সংযোজিত অন্যান্য বস্তু ব্যবহার করার সময় বাগানি বা কৃষককে মাটি জীবাণুমুক্ত করা, ভারী ধাতুর উপস্থিতি পরীক্ষা করে মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়টি সংকটপূর্ণ বৈশিষ্ট্য বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সবজি চাষের ক্ষেত্রে মাটি শোধনের পাশাপাশি গ্রোয়িং মিডিয়ার গুণাগুণ ও স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে। ভার্মিকম্পোস্ট, রান্নাঘর ও খাবারের উচ্ছিষ্টাংশ দিয়ে বানানো সার, চা-কম্পোস্ট, ডিম খোসা ভাঙা মিশানো, নতুন মাশরুম কম্পোস্ট, নিমখৈল, সরিষাখৈল, ইত্যাদি ছাড়াও যে কোন বায়োলজিক্যাল কম্পোস্ট উৎস সম্বন্ধে নিশ্চিত হয়ে ব্যবহার করতে হবে। রাসায়নিক পেস্টিসাইড ব্যবহারের ক্ষেত্রে বোতলের গায়ের নিয়মাবলি কঠোরভাবে পালন করতে হবে। বালাইনাশক ব্যবহারের পর পাতা ও ফলজাতীয় সবজি আহরণের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ উত্তম কৃষি চর্চা অনুসরণ করতে হবে। পোকা দমনে ফ্লাইং ইনসেক্টের জন্য ফেরোমন ট্রাপ, সোলার লাইট ট্রাপ, আঠালো ট্রাপ, পেঁয়াজ পাতার ও ছোলা পেস্ট বা নির্যাস, রসুন, গাঁদা, চন্দ্রমল্লিকা ফুলের নির্যাস ভালো কাজ করবে।
কৃষিতে বায়োটেকনোলজি ও ন্যানোটেকনোলজির ব্যবহার বাড়ানো, নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ, রোগবালাই প্রতিরোধী উন্নত জাত উদ্ভাবন করতে হবে। এড়ড়ফ অমৎরপঁষঃঁৎধষ চৎধপঃরপবং (এঅচ)  অনুযায়ী সবজি উৎপাদন ব্যবস্থা ও রপ্তানি ক্ষেত্রে মাননিয়ন্ত্রণ এবং সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে । সবজি সংরক্ষণ পদ্ধতি, কোল্ড চেইন ও ফসল সংগ্রহপরবর্তী ব্যবস্থাপনা, কীটপতঙ্গ ও রোগ ব্যবস্থাপনা এবং নিরাপদ উৎপাদন পদ্ধতি, জেনেটিক সম্পদ সংরক্ষণ, এবং ব্যবহারী সবজির রপ্তানি বৃদ্ধি, মূল্যসংযোজনসহ অন্যান্য দিকে সংশ্লিষ্ট সকলকে আন্তরিকতা বাড়াতে হবে। এছাড়াও ফসলের বছরব্যাপী নিয়ন্ত্রিত চাষাবাদ, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও সেচ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন জরুরি।
রূপকল্প ২০৪১  বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে সরকারি- বেসরকারি, সুশীল সমাজ আসুন সম্মিলিতভাবে কাজ করি।

লেখক : নির্বাহী চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, প্রধান ডকুমন্টেশস কর্মকর্তা, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, মোবাইল : ০১৭১১১০২১৯৮, ই-মেইল :susmitabarc@gmail.com


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon